গ্যালারি ব্যবস্থাপনা / আর্ট মিউজিয়াম
১. আর্ট মিউজিয়াম / গ্যালারি অবকাঠামো কি হবে ও অকাঠামোতে
কি কি সুযোগ সুবিধা থাকতে হবে ।
২. আর্ট মিউজিয়াম / গ্যালারিতে সঠিকভাবে সংরক্ষণের জন্য শীতাতাপ
/ আদ্রতা / আলোক ব্যবস্থা কি হবে ।
৩. আর্ট মিউজিয়াম বা গ্যালারির ন্যুনতম জনবল কি হবে ও তাদের
কার্যপরিধি কি হবে ।
৪. আর্ট মিউজিয়ামের কার্যক্রম কি হবে ও একটি একক বা ছোট গ্রুপ
প্রদর্শনী আয়োজনে কি কি করণীয় রয়েছে ।
৫. জাতীয় পর্যায়ে কোন প্রদর্শনী আয়োজনে কি কি করণীয় রয়েছে
।
৬. আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোন প্রদর্শনী আয়োজনে কি কি করণীয়
রয়েছে ।
৭. অন্যান্য কর্মসূচী যেমন সেমিনার , কর্মশালা , আর্টক্যাম্প
ইত্যাদির জন্য কি কি করণীয় রয়েছে ।
আর্ট মিউজিয়াম
/ গ্যালারি অবকাঠামো কি হবে ও কি কি সুযোগ সুবিধা থাকতে হবে ।
১ । সাময়িক প্রদর্শনী এলাকা
২ । স্থায়ী প্রদর্শনী এলাকা
৩ । নিজস্ব সংগ্রহের জন্য স্থায়ী স্টোর
৪ । সাধারণ স্টোর
৫ । রেস্টোরেশন / কনজারভেশন ল্যবরেটরী
৬ । ফটোগ্রাফী ল্যাবরেটরী / স্টুডিও
৭ । সেমিনার কক্ষ / কর্মশালা কক্ষ / প্রশিক্ষন কক্ষ
৮ । প্রকাশনা বিক্রয় কেন্দ্র / রিসিপশন কাউন্টার
৯ । ক্যাফেটোরিয়া
১০ । প্রয়োজনীয় সংখ্যক টয়লেট
১১ । লবি
১২ । পর্যাপ্ত খোলামেলা জায়গা
১৩ । দাপ্তরিক এলাকা
আর্ট মিউজিয়ামের কার্যক্রম
১. আর্ট মিউজিয়ামের স্থায়ী সংগ্রহ গড়ে তোলা এবং স্থায়ী সংগ্রহের
নির্বাচিত শিল্পকর্ম পর্যায়ক্রমে
স্থায়ীভাবে প্রদর্নের ব্যবস্থা করা ।
২. বছরে ৬ হতে ৮টি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা । ৬ বা ৮টি প্রদর্শনীর
ভেতর অন্ততঃপক্ষে ১টি জাতীয় প্রদর্শনী , ১টি বিদেশী প্রদর্শনী , ১টি দলীয় প্রদর্শনী
ও ৩ বা ৪টি একক প্রদর্শনী আয়োজন ।
৩. সম্ভব হলে দ্বিবার্ষিক বা ত্রিবার্ষিক ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক
চারুকলা প্রদর্শনী আয়োজন করা ।
৪. বছরে অন্ততঃ ২/৩টি কর্মশালা / আর্ট ক্যাম্প আয়োজন করা
। এর ভেতর একটি ঢাকার বাইরে আয়োজিত হতে পারে ।
৫. শিল্পকলার তত্বগত দিক সম্পর্কে ন্যুনতম ধারণা প্রদানের
উদ্দেশ্যে বছরে ৬ বা ৮ সপ্তাহ মেয়াদী ২টি শিল্পবোধ ও শিল্পকলার ইতিহাস বিষয়ক কোর্স
আয়োজন ।
৬. বছরে ২ জন করেতরুণ শিল্পীকে ফেলোশিপ বা বৃত্তি প্রদান
করা ।
৭. ‘গ্রাফিক্স প্রিন্ট স্টুডিও’ স্থাপন করা । প্রিন্টমেকাররা
নির্ধারিত ফি প্রদান করে এই স্টুডিও ব্যবহার করতে পারবেন ।
৮. প্রতি মাসে নির্ধারিত ১ বা ২ দিন শিল্পকলা বিষয়ক প্রামাণ্য
চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা ।
৯. প্রতি বছর ২ বা ৩টি চারুকলা বিষয়ক সেমিনার অলোচনা সভার
আয়োজন করা ।
১০. স্কুল কলেজের ছাত্র/ছাত্রীদের বিশেষ ব্যবস্থায় প্রতি
সপ্তাহে ১ বা ২ দিন আর্ট মিউজিয়ামের স্থায়ী সংগ্রহ পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা ।
১১. নির্বাচিত শিল্পীদের উপর সচিত্র গ্রন্থ , ফোলিও , পিকচার
পোস্টকার্ড , চিত্রপ্রতিলিপি ইত্যাদি প্রকাশ করা ও সুলভ মূল্যে বিতেরণের ব্যবস্থা করা
।
১২. দেশের শিল্পকলা উন্নয়ন ও প্রসারের লক্ষ্যে অন্যান্য কর্মসূচী
গ্রহণ ।
গ্যলারির ভেতরের আলোক ব্যবস্থা
সব শিল্পকর্মই আলোক সংবেদনশীল বিশেষত কাগজের ওপর করা কাজ
( জলরং , প্রিন্ট ও ড্রইং ) ও আলোকচিত্র । আলো রঙের পিগমেন্টের জ্যোতি কমিয়ে দেয় ,
কাগজ হলুদ করে বা কাগজকে কুচকে ফেলে যা শেষ পর্যন্ত কাগজের কাঠামোকে দুর্বল করে ফেলে
। মৃদু আলোর চাইতে তীব্র আলো কাগজের জন্য বেশ ক্ষতিকর তবে দীর্ঘস্থায়ী মৃদু আলো স্বল্পস্থায়ী
তীব্র আলোর মতই ক্ষতিকর হতে পারে । আলোর অকি বেগুনীরশ্মির বিকিরণের দরণ কাগজের এই ক্ষতি
হয় ও একে যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখা উচিত । সে কারণে শিল্পকর্মকে রক্ষার জন্য একটি অতি
বেগুণী রশ্মি রোধক ফিল্টার সম্বলিত চকচকে পার্সপেক্স আবরণ ব্যবহার করা হয়ে থাকে । সে
যাই হোক শিল্পকর্মের ওপর যাতে সরাসরি সূর্যের আলো না পড়তে পারে তা লক্ষ্য রাখতে হবে
ও কৃত্রিম আলোও প্রদর্শনীর জন্য নির্ধারিত মাত্রার মধ্যে থাকতে হবে । কারণ ভিন্ন ভিন্ন
ধরণের শিল্পকর্মের আলোক সংবেদনশীলতা ভিন্ন ভিন্ন হয় । সুতরাং একেকটি প্রদর্শনীতে আলোক
সজ্জা একেক রকম হবে । তবে বেশীরভাগ কাজের ক্ষেত্রে ৫০ হতে ১০০ এলইউএক্স আলো প্রয়োজন
হয় । এলইউএক্স স্তর নির্ধারণের জন্য সাধারণ তলের সমান্তরাল / পাশাপাশি রাখতে হবে যাতে
সেখানে কি পরিমাণ আলো পড়ছে তা সঠিকভাবে বোঝা যায় ।
প্রদর্শনী গ্যালারির আদ্রতা ও তাপমাত্রা
আদ্রতার স্বল্পতা ও আধিক্য শিল্পকর্মের জন্য ক্ষতিকর । আদ্রতার
আধিক্য ছত্রাক সৃষ্টি করে বা কাগজের নমনীয়তা নষ্ট করে । সাধারণভাবে ছত্রাক হলে তা দেখতে
ছোট বাদামী ররে বিন্দু বা দাগের মত দেখায় যাকে ‘ফক্সিং’ বলা হয় । ছত্রাক বা ব্লুমিং
( রঙের ওপরের স্তরের ভার্নিশের রং নষ্ট হয়ে গিয়ে সাদা বা অস্বচ্ছ আবরণ সৃষ্টি হওয়া
) এর দরুণ ক্যানভাসের ওপর করা কাজেরও ক্ষতি হয় । স্ট্রেচার বা স্ট্রেইনার বাঁকা হয়ে
যাওয়ার দরুণ ক্যানভাসে ভাঁজের সৃষ্টি হয় ও এর কাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হয় । ধাতব ভাস্কর্যের
ওপর মরচে পড়ে ও কাঠ বাঁকা হয়ে যাওয়ার দরুণ কাঠের ওপর কাঠের ওপর করা কাজ ক্ষতিগ্রস্থ
হয় বা কাঠ ফেটে যায় । আবার আদ্রতার প্রয়োজনীয় স্তরের নিচে থাকাও ক্ষতিকর । এতে কাগজের
ওপর করা কাজ ভঙ্গুর হয়ে যায় , ক্যানভাস ক্ষেপে বা ছোট হয়ে যাওয়ার দরুণ ছিড়ে যাওয়ার
কারণে ক্যানভাসের ওপর রঙের স্তর ফেটে যায় বা টুকরো টুকরো হয়ে যায় । আদ্রতার স্বল্পতা
বোর্ড বা প্যানেলের ওপর করা কাজেরও ক্ষতি করে ।
প্রদর্শনী স্পেসিফিকেশনে প্রয়োজনীয় আদ্রতা ও তাপমাত্রাও নির্ধারণ
করা থাকে । আদ্রতার ক্ষেত্রে সবচাইতে গ্রহণযোগ্য পর্যায়টি হল ৫৫% (+- ৫%) । তাপমাত্রার
ক্ষেত্রে সবচাইতে গ্রহণযোগ্য স্তরটি হল ২০° সে. (+- ২%) । লক্ষ্য
রাখতে হবে তাপমাত্রা ও আদ্রতার স্তর যেন ওঠানামা না করে যেমন দিনের বেলায় এয়ার কন্ডিশনার
চালু রাখা ও রাতের বেলায় তা বন্ধ করে রাখা । তবে পরিবেশের ঘন ঘন পরিবর্তন আরএইচ বা
তাপমাত্রা বা আদ্রতার সুপারিশকৃত স্তরের সামান্য নিচে বা উপরে থাকার চাইতেও বেশি ক্ষতিকর
। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ২৪ ঘন্টার মধ্যে আরএইচ স্তরের স্থীতিশীলতা । অর্থাৎ
প্রদর্শনী গ্যালারিতে সার্বক্ষণিক বিষয়টি মনিটরিং করার ব্যবস্থা রাখতে হবে ।
জাতীয় পর্যায়ের কোন প্রদর্শনী আয়োজনে করণীয়
১. জাতীয় পর্যায়ের কোন প্রদর্শনীর জন্য অন্ততঃ ৯ মাস
পূর্ব থেকে প্রস্তুতি পর্বের কাজ শুরু করতে হবে।
২. প্রস্তুতি পর্বের কাজঃ
* প্রদর্শনী
শুরু করার সম্ভাব্য সময়কাল নির্ধারণ
* জাতীয়
পর্যায়ের প্রদর্শনীতে অংশ গ্রহণের উদ্দেশ্যে কোন কোন শিল্পীকে চিঠির মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হবে তার তালিকা
প্রস্তুত করণ
* প্রদর্শনীতে
অংশগ্রহণ সম্পর্কিত নীতিমালা প্রস্তুত করা। নীতিমালাতে থাকবে একজন শিল্পী কয়টি করে
শিল্পকর্ম জমা দিতে পারবেন। শুরুতেই মূল শিল্পকর্ম জমা নেয়া হবে নাকি শিল্পকর্মের
ফাটোগ্রাফ / স্লাইড জমা নেয়া হবে। কি কি মাধ্যমের শিল্পকর্ম গ্রহণযোগ্য হবে ? শিল্পকর্মের
সাইজ কি হবে ? কোন পুরস্কার থাকবে কি না ? পুরস্কার থাকলে কি ধরনের পুরস্কার হবে ?
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য কি যোগ্যতা থাকতে হবে ? ফটোগ্রাফ জমা নেয়া হলে জমা
নেয়ার সময়কাল। নির্বাচনের পর মূল শিল্পর্ম জমা নেয়ার সময়কাল। শিল্পীদেরকে
শিল্পকর্মের আখ্যা, মাধ্যম, সাইজ ও বছর উল্লেখ করতে হবে। নীতিমালার সঙ্গে একটি
এন্ট্রি ফর্ম থাকবে যেটি পূরণ করে শিল্পীগণ শিল্পকর্ম জমা দেবেন। অংশগ্রহণকারী
শিল্পীকে প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত সকল নীতিমালা মেনে চলার অঙ্গীকার
প্রদান করে এন্ট্রি ফর্মে স্বাক্ষর করতে হবে।
* প্রদর্শনীর
জন্য লোগো তৈরী; নীতিমালা, এন্ট্রি ফর্ম, চিঠি, প্যাড, নেভেলপ ইত্যাদি মুদ্রণ করা।
* শিল্পীদের
নিকট নীতিমালা, এন্ট্রিফর্ম সহ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে নির্বাচনের জন্য
শিল্পকর্মের ফটোগ্রাফ / স্লাইড জমা দেয়ার অহবান জানানো।
* নীতিমারায়
শিল্পীদেরকে শিল্পকর্মের ফটোগ্রাফ / স্লাইড জমা দেয়ার জন্য ন্যুনতম ৩ থেকে ৪ মাস
সময় দেয়া উচিত।
৩. শিল্পকর্ম নির্বাচন
শিল্পকর্মের
ফটোগ্রাফ বা স্লাইড গ্রহণের নির্ধারিত শেষ তারিখের পূর্বেই নির্বাচন কমিটির সদস্য
হতে পারেন এমন যোগ্যতা সম্পন্ন ৫ জন শিল্পী সমন্বয়ে একটি নির্বাচন কমিটি গঠন করতে
হবে। নির্বাচন কমিটিতে শিল্পসমালোচকও অন্তর্ভূক্ত হতে পারেন। স্লাইড / ফটোগ্রাফ
জমা নেয়ার পর পরই নির্বাচন কমিটি ৪/৫ দিন ধরে সময় নিয়ে প্রাপ্ত স্লাইড/ফটোগ্রাফ
পরীক্ষা করে দেখে প্রদর্শনীর জন্য শিল্পকর্ম নির্বাচন করবেন। মিউজিয়ামের পক্ষ থেকে
নির্বাচন কমিটিকে প্রদর্শনী গ্যালারির ওয়াল স্পেস ও ফ্লোর স্পেসের পরিমাণ বলে দেয়া
হবে এবং সেই সঙ্গে আনুমানিক কয়টি চিত্রকর্ম বা ভাস্কর্যের স্থান সংকুলান হবে তাও
বলে দেয়া হবে। নির্বাচন কমিটি গ্যালারি স্পেস অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিল্পকর্ম
নির্বাচন করবেন। তবে নির্বাচন কমিটি মনে করলে কম সংখ্যক শিল্পকর্মও নির্বাচন করতে
পারবেন। শিল্পকর্ম নির্বাচন প্রক্রিয়ার সময়ই নির্বাচিত ও অনির্বাচিত শিল্পকর্মের
স্লাইড/ফটোগ্রাফ পৃথক করতে হবে এবং নির্বাচিত শিল্পকর্মের তালিকা প্রস্তুত করতে
হবে।
নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হলে নির্বাচন কমিটি তালিকার সঙ্গে
নির্বাচিত শিল্পকর্ম সমূহের ফটোগ্রাফ মিলিয়ে দেখবেন ঠিক আছে কিনা এবং নির্বাচন
কমিটির সকল সদস্য নির্বাচিত শিল্পকর্মের তালিকায় স্বাক্ষর করবেন।
এর পর নির্বাচিত শিল্পকর্মের তালিকা নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে
দিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পীদেরকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হবে । চিঠিতে প্রদর্শনী
উদ্বোধনের অন্ততঃ ৬ সপ্তাহ পূর্বে মূল শিল্পকর্ম জমা দেয়ার
কথা বলতে হবে ।
৪. প্রদর্শনীর ব্রোশিউর
ব্রাশিউর বা ক্যাটালগ
প্রদর্শনীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কেননা প্রদর্শনীর পর ব্রোশিউরই স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত
হবে । শিল্পী নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হবার পরপরই ব্রোশিউরের কাজ শুরু করতে হবে । প্রদর্শনীতে
অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত প্রত্যেক শিল্পী অন্ততঃ ১টি করে চিত্রকর্মের প্রতিলিপি ব্রোশিউরে
স্থান পাবে । এছাড়া ব্রোশিউরের নির্বাচিত শিল্পকর্মের তালিকা বাংলা ও ইংরেজী দুই ভাষাতেই
ছাপা হতে পারে বা শুধু ইংরেজীতেও হতে পারে । প্রদর্শনী ও প্রদর্শনীর নির্বাচিত চিত্রকর্ম
সমূহের উপর একটি ভূমিকা ব্রোশিউরে ছাপা হবে । ভূমিকা লেখার জন্য একজন শিল্পসমালোচক
বা শিল্পকলার ইতিহাসবিদ মনোনীত করতে হবে । মনোনীত ব্যক্তি মিউজিয়ামে এসে নির্বাচিত
শিল্পীদের শিল্পকর্মের ফটোগ্রাফগুলি দেখে নোট নেবেন । তাঁকে অন্ততঃ প্রদর্শনী উদ্বোধনের
৪ সপ্তাহ পূর্বে লেখা প্রদানের জন্য বলতে হবে । ভুমিকা ইংরেজী ও বাংলা উভয় বা যে কোন
১ ভাষায় হতে পারে । এছাড়া ব্রোশিউরে মিউজিয়ামের পক্ষ হতে ছোট একটি মুখবন্ধ থাকবে ।
মুদ্রণ কাজের জন্য ভালো ছাপাখানা নির্বাচন করতে হবে যাতে মুদ্রণ কাজটি মান সম্পন্ন
হয় । প্রদর্শনী উদ্বোধনের ২ দিন পূর্বে ব্রোশিউর মুদ্রণ কাজ মেষ করতে হবে ।
৫. শিল্পকর্ম ডিসপ্লে
জাতীয় পর্যায়ের
কোন প্রদর্শনী আয়োজনের পূর্বে অন্ততঃ ৬ সপ্তাহ পূর্ব হতে গ্যালারিতে অন্য কোন প্রদর্শনী
না থাকা বাঞ্চনীয় । প্রদর্নীর শিল্পকর্ম ডিসপ্লের পূর্বে গ্যালারিতে কোন সংস্কার কাজের
প্রয়োজন থাকলে তা করিয়ে নেয়া এবং সম্পূর্ণ গ্যালারি নতুন করে রং করানো । প্রদর্শনী
উদ্বোধনীর অন্ততঃ ৭ দিন পূর্বে শিল্পকর্ম ডিসপ্লের কাজ সম্পন্ন করা উচিত । হাতে বেশ
সময় নিয়ে ডিসপ্লের কাজটি করা উচিত । শিল্পকর্ম ডিসপ্লের সময় শিল্পীদেরকে প্রদর্শনী
গ্যালারীর ভেতর না রাখাটাই ভালো । তবে কোন কোন সময় ভাস্কর্য বা স্থাপনাকর্ম ডিসপ্লের
সময় সংশ্লিষ্ট শিল্পীর উপস্থিতি প্রয়োজন হতে পারে ।
৬. পুরস্কার
পুরস্কার নির্বাচনের
জন্য বিশিষ্ট শিল্পী সমন্বয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিচারকমন্ডলী গঠন করতে হবে । বিশিষ্ট
কোন শিল্পসমালোচকও কমিটির সদস্য হতে পারেন । শিল্পকর্ম ডিসপ্লে ও শিল্পকর্মের লেবেল
লাগানোর কাজ প্রদর্শনী উদ্বোধনের ৭ দিন পূর্বে সম্পন্ন করতে হবে । শিল্পকর্ম ডিসপ্লের
কাজ সম্পন্ন হবার পর বিচারক মন্ডলীর সদস্যগণ ২/৩ দিন ধরে পর্যায়ক্রমে প্রদর্শনীর সকল
শিল্পকর্ম সমূহ পরিদর্শন করে পুরস্কারের জন্য শিল্পকর্ম ও শিল্পী নির্বাচন করবেন ।
নির্বাচন কাজ অবশ্যই প্রদর্শনী উদ্বোধনের ৩ দিন পূর্বে শেষ করতে হবে । যাতে করে পুরস্কার
প্রাপ্ত শিল্পকর্ম সমূহ ব্রোশিউরে ছাপা যায় ।
৭. উদ্বোধন
প্রদর্শনী উদ্বোধনের
জন্য অন্ততঃ সপ্তাহ পূর্বে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির নাম ঠিক করে তাঁদের সম্মতি
গ্রহণ করতে হবে । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রের মুদ্রণ কাজ অন্ততঃ ২ সপ্তাহ পূর্বে
শেষ করা উচিত এবং আমন্ত্রণপপত্র ও এনভেলপের নকশা যথাসম্ভব শোভন হওয়া বাঞ্চনীয় যাতে
করে আমন্ত্রিত অতিথির নিকট কার্ডটি পৌঁছানোর পর প্রদর্শনী সম্পর্কে তাঁর ভালো ধারণা
তৈরি হয় । কূটনীতিবিদ, শিল্পী, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক, শিল্পপতি ইত্যাদি ক্ষেত্রের বিশিষ্ট
ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত করে কার্ড পৌঁছাতে হবে । প্রদর্শন শুরুর অন্ততঃ ৫/৬ দিন
পূর্বে সকলের নিকট কার্ড পৌঁছানোর কাজ শেষ করতে হবে ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মিউজিয়ামের ভেতরের সেমিনার কক্ষে বা বাহিরে
উন্মুক্ত স্থানে হতে পারে । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য মাইক্রোফোন, পেছনের ব্যানার,
আসন ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকতে হবে ।
৮. প্রচার
প্রদর্শনীর প্রচারের জন্য পোস্টার মুদ্রণ করে শহরের
বিভিন্ন স্থানে লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে । এছাড়া মিউজিয়ামের প্রবেশ পথে বড় ব্যনার
লাগাতে হবে । সাংবাদিক সম্মেলনের ব্যবস্থা করতে হবে । জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিকসহ সকল
সংবাদ মাধ্যমে কার্ড ও প্রদর্শনী কভার করার জন্য পৃথক চিঠি দিতে হবে । এছাড়া শিল্পসমালোচকদেরকেও
লেখার জন্য অনুরোধ জানানো যেতে পারে ।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোন প্রদর্শনী আয়োজনে করণীয়
১. আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রদর্শনী প্রধানতঃ দ্বিবার্ষিক
( বিয়েন্নাল ) বা ত্রিবার্ষিক ( ট্রিয়েনাল ) ভিত্তিতে
হয়ে থাকে । তবে বিভিন্ন দেশে বিয়েন্নাল বা দ্বিবার্ষিক প্রদর্শনী বেশি হয়ে থাকে ।
বিশ্বের উল্লেখযোগ্য বিয়েন্নাল প্রদর্শনী সমূহের ভেতরে রয়েছে
ভেনিস বিয়েন্নাল, সাওপাওলো বিয়েন্নাল, শারজাহ্ বিয়েন্নাল, তেহরান বিয়েন্নাল, এশিয়ান
আর্ট বিয়েন্নাল বাংলাদেশ প্রভৃতি । উল্লেখযোগ্য ট্রিয়েনাল প্রদর্শনীর ভেতর রয়েছে দিল্লী
ট্রিয়েনাল, ফুকুওকা ট্রিয়েনাল, কায়রো ট্রিয়েনাল ইত্যাদি ।
২. বিয়েন্নাল প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য অন্ততঃ দেড় বছর এবং
ট্রিয়েনাল প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য অন্ততঃ দুই বছর পূর্ব থেকে প্রস্তুতি পর্বের কাজ
শুরু করতে হয় ।
৩. প্রস্তুতি
পর্বের কাজ :
ক. আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রদর্শনী আয়োজনে সরকারের বিভিন্ন
মন্ত্রণালয় ও সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতার প্রয়োজন হয় । বিশেষ করে সংস্কৃতি বিষয়ক
মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আমদানী রপ্তানী অধিদপ্তর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিমান
বন্দর / নৌ বন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংক ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের সক্রিয়
সহযোগিতা ও সমর্থন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একটি প্রদর্শনী বাস্তবায়নে একান্তভাবে আবশ্যক
।
খ. শুরুতেই সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের
সচিব বা সংশ্লিষ্ট আর্ট গ্যালারি/মিউজিয়ামের প্রধানের নেতৃত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়
ও সংস্থার প্রতিনিধি এবং বিশিষ্ট শিল্পী ও শিল্প সমালোচকদের সমন্বয়ে একটি সাংগঠনিক
কমিটি গঠন করতে হবে । সাংগঠনিক কমিটির প্রথম সভায় নিম্নবর্ণিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করতে হবে :
১. প্রদর্শনীর রূপরেখা প্রণয়ন ও বিভিন্ন
দেশের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ সম্পর্কিত
গাইড লাইন ঠিক করা ;
২. প্রদর্শনীটি দ্বিবার্ষিক হবে না
ত্রিবার্ষিক হবে তা ঠিক করা ;
৩. প্রদর্শনী আয়োজনের সম্ভাব্য সময়কাল
নির্ধারণ ;
৪. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির
মতামত নিয়ে কোন্ কোন্ দেশকে আমন্ত্রণ করা হবে তা ঠিক করা ।
৫. প্রদর্শনী সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে বিভিন্ন
খাতে আনুমানিক ব্যয়ের বাজেট ভাঙ্গন প্রস্তুত ও অনুমোদন নেয়া ;
৬. প্রদর্শনীর বিভিন্ন কাজ সুষ্ঠুভাবে
বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে নিম্নবর্ণিত উপকমিটি সমূহ গঠন করা :
·
সেমিনার উপ কমিটি
·
প্রকাশনা উপ কমিটি
·
অর্থ উপ কমিটি
·
বিভিন্ন দেশের শিল্পকর্ম ছাড় করানো ও ডিসপ্লে উপ কমিটি
·
সাজ সজ্জা উপ কমিটি
·
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও নিরাপত্তা উপ কমিটি
·
প্রচার উপ কমিটি
·
বিদেশী প্রতিনিধিদের অভ্যর্থনা ও আতিথেয়তা উপ কমিটি
·
টেন্ডার কমিটি
·
স্থানীয় শিল্পীদের নির্বাচন কমিটি
৭. প্রদর্শনীতে পুরস্কার প্রদান সম্পর্কে
সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ৫ সদস্যের আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড গঠন ;
৮. প্রদর্শনীতে বিদেশী দেশ সমূহের
অংশগ্রহণ সম্পর্কিত নীতিমালা প্রনয়ণ করা।
গ. সাংগঠনিক
কমিটির প্রথম সভার পর পরই প্রদর্শনীর ‘লোগো’ তৈরী করে বিভিন্ন দেশকে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের
আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানোর চিঠি, প্রদর্শনীর রূপরেখা সহ বিদেশী দেশ সমূহের অংশগ্রঞণ
সম্পর্কিত নীতিমালা, এন্ট্রিফর্ম, সিডিউল ফর্ম, লেবেল, বিভিন্ন সাইজের এনভেলাপ ইত্যাদির
মুদ্রণ কাজ যথা শোভনভাবে সম্পন্ন করতে হবে ।
ঘ. আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র সংস্কৃতি
মন্ত্রীর পক্ষ হতে তার প্রতিপক্ষ বা সাংগঠনিক কমিটির সভাপতির পক্ষ হতে প্রেরণ করা যেতে
পারে । আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পত্রের সঙ্গে এক সেট নীতিমালা, এন্ট্রিফর্ম, সিডিউল ফর্ম
ইত্যাদি থাকবে । সাধারণত: পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আনু্ষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র
সম্বলিত প্যাকেট সংশ্লিষ্ট দেশ সমূহের বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো হয়ে থাকে । বাংলাদেশ
দূতাবাস প্রধান আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণপত্র সম্বলিত প্যাকেট সেই দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রী
বা সংশ্লিষ্ট প্রাপকের কাছে হস্তান্তর করবেন ।
এ ছাড়া বাংলাদেশস্থ সংশ্লিষ্ট দেশ
সমূহের দূতাবাস প্রধানকেও আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পত্রের প্রতিলিপিসহ অনুরোধপত্র ও নীতিমালা,
এন্ট্রিফর্ম, সিডিউলফর্ম, ইত্যাদি সম্বলিত প্যাকেট প্রদান করতে হবে ।
বিভিন্ন দেশের নিকট আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ
পত্র বিয়েন্নাল প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে ১২ মাস পূর্বে এবং ট্রিয়েনাল প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে
১৫ মাস পূর্বে পৌছাতে হবে । যাতে করে সংশ্লিষ্ট দেশ সমূহ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে
প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য পর্যাপ্ত সময় পায় ।
ঙ. অঅর্ন্তজাতিক পর্যায়ের প্রদর্শনীকত
একটি দেশের অংশগ্রহণ দুইভাবে হতে পারে । সরকারী পর্যায়ে বা ব্যক্তিগত পর্যায়ে । অর্থাৎ
সরকারী পর্যায়ে কোন গ্যালারি বা প্রতিষ্ঠান শিল্পী ও শিল্পকর্ম নির্বাচন করে প্রদর্শনীর
উদ্দেশ্যে পাঠাতে পারে । আর ব্যক্তিগত পর্যায়ে শিল্পীরা প্রথমে তাদের কাজের স্লা্ইড
বা ফটোগ্রাফ পাঠাতে পারে নির্বাচনের জন্য । প্রদর্শনী আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ একটি নির্বাচন
কমিটির মাধ্যমে যাদের শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করবে শুধুমাত্র তারাই প্রদর্শনীতে
অংশগ্রহণের জন্য মূল শিল্পকর্ম প্রেরণ করবে ।
চ. বিভিন্ন দেশে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র
প্রেরণের পর প্রদর্শনীতে স্বাগতিক দেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন
করে চিঠি সহ নীতিমালা শিল্পীদের নিকট পাঠাতে হবে ।
৪. বিভিন্ন দেশের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের
নীতিমালায় নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি থাকতে হবে:
·
একটি দেশের জন্য বরাদ্দকৃত ওয়াল স্পেস ও ফ্লোর স্পেসের পরিমাণ;
·
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে ব্রোশিউরের জন্য ডকুমেন্টেশন
ম্যাটেরিয়াল অর্থাৎ শিল্পকর্মের তালিকা, ফটোগ্রাফ বা স্লাইড, শিল্পীদের সংক্ষিপ্ত জীবন
বৃত্তান্ত, এন্ট্রিফর্ম, সিডিউল ফর্ম ইত্যাদি প্রেরণের সময়কাল;
·
মূল শিল্পকর্ম পৌছানোর সময়কাল । মূল শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর
অন্তত: ৬ সপ্তাহ পূর্বে পৌছাতে হবে ।
·
কোন প্রতিনিধি আসবেন কিনা, আসলে একটি দেশ থেকে কতজন প্রকতনিধি
আসতে পারবেন । তাদেরকে কতদিনের স্থানীয় আতিথেয়তা দেয়া হবে । যতায়াতের বিমান ভাড়া দেয়া
হবে কিনা ?
·
শিল্পকর্ম প্রেরণ ও প্রদর্শনী শেষে ফেরত নিয়ে যাওয়ার পরিবহন
ব্যয় প্রদর্শনী আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ বহন করবে নাকি অংশগ্রহণকারী দেশকে বহন করতে হবে
?
·
উল্লেখ্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে
পরিবহন ব্যয় ও প্রতিনিধিদের বিমান ভাড়া অংশগ্রহণকারী দেশকেই বহন করতে হয় ।
৫. সেমিনার
যে কোন আন্তর্জাতিক
প্রদর্শনী হলেই দুই দিনের আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে । সেমিনার উপ কমিটি
সেমিনার অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্ব পালন করে ।
সেমিনার
উপ কমিটি তাদের প্রথম বৈঠকেই সেমিনারের বিষয় নির্ধারণ করবে । সেমিনারের জন্য একজন প্রধান
বক্তা ( কী নোট স্পিকার ) ঠিক করবে । কী নোট পেপার ১টি বা ২টি হতে পারে । দুটি হলে
স্বাগতিক দেশের ১ জন ও বিদেশের ১ জন কী নোট পেপার উপস্থাপন করবেন । এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট
বিষয়ের উপর অংশগ্রহণকারী দেশ সমূহের ১ জন করে প্রতিনিধি ৫ হতে ৭ মিনিটের পেপার উপস্থাপন
করবেন ।
বিভিন্ন
দেশে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র প্রেরণকালেই সেমিনারের বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে ও সেমিনারে
অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধির নাম ও লিখিত পেপার পাঠানোর সময়কাল জানিয়ে দিতে হবে ।
দুদিনের
সেমিনারে অন্তত: ৫ হতে ৬টি অধিবেশন হবে । শুরুতে হবে উদ্বোধন অধিবেশন ও শেষে সমাপনী
অধিবেশন । প্রতিটি অধিবেশনেই ১ জন করে বিশিষ্ট শিল্পী বা শিল্প সমালোচক সভাপতিত্ব
করবেন । ৬টি অধিবেশন হলে অন্তত: ৩/৪ টি অধিবেশনে বিদেশী প্রতিনিধি বা জুরি বোর্ডের
বিদেশী সদস্যদের ভেতর হতে কেউ সভাপতিত্ব করবেন ।
সেমিনারে
পঠিত কী নোট পেপারসহ প্রতিটি পেপারের উপর আলোচনা হবে ।
৬. বিভিন্ন
শিল্পকর্ম ছাড় করানো
বিভিন্ন
দেশ হতে আগত শিল্পকর্ম বিমান বন্দর বা নৌ বন্দর হতে ছাড় করানোর কাজটি খুবই দুরহ কাজ
। এ বিষয়ে পূর্ব হতেই আমদানী রপ্তানী অধিদপ্তর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক
ও কাস্টম্স কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে । এছাড়া অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানকে
শিল্পকর্ম ছাড় করানো ও প্রদর্শনী মেষে ফেরত পাঠানোর কাজের জন্য “কাস্টম্স কিলয়ারিং
পরওয়ার্ডিং এজেন্টে” নিয়োগ করতে হবে । বিভিন্ন দেশের আগত শিল্পকর্মের বাক্স খোলা ও
কাস্টম্স চেকিং-এর কাজটি যাতে প্রদর্মনী গ্যালারিতেই করা হয় সে বিষয়েও অনুমতি গ্রহণ
করতে হবে ।
৭. শিল্পকর্ম
ডিসপ্লের কাজ
আন্তর্জাতিক
পর্যায়ের প্রদর্শনী যদি ১টি গ্যালারিতে স্থান সংকুলান না হয় তা হলে একাধিক গ্যালারিতে
আয়োজিত হতে পারে । প্রদর্শনী শুরুর অন্তত: ১ মাস পূর্বে গ্যালারি সমূহের প্রয়োজনীয়
সংস্কার ও রং-এর কাজ ও আলোর ব্যবস্থা করতে হবে । বিভিন্ন দেশের শিল্পকর্ম ৬ সপ্তাহ
পূর্বে পৌছানোর কথা থাকলেও অনেক সময় দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতার কারণে পৌছাতে বিলম্ব হয়
। কোন কোন দেশের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু হয়ে যাবার পরও এসে পৌছে । প্রথমে প্রদর্শনী
গ্যালারিতে বিবিন্ন দেশের জন্য দেোল নির্ধারণ করে রাখতে হবে ।
প্রদর্শনী
উদ্বোধনের ৪ বা ৩ সপ্তাহ পূর্ব হতেই শিল্পকর্ম ডিসপ্লের কাজ শুরু করতে হবে । শিল্পকর্ম
ডিসপ্লের জন্য একাধিক গ্রুপ নিয়োজিত করতে হবে । প্রদর্শনী শুরুর ৫ দিন পূর্বেই শিল্পকর্ম
ডিসপ্লের কাজ ও লেবেল লাগানোর কাজ শেষ করতে হবে । অর্থাৎ এরপর যে সকল দেশের শিল্পকর্ম
এসে পৌছাবে সে সব দেশ প্রতিযোগিতার বাইরে থাকবে ।
৮. পুরস্কার
নির্বাচন
পুরস্কারের
জন্য সাংগঠনিক কমিটি ৫ সদস্যের আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড গঠন করতে হবে । জুরি বোর্ডে
স্বাগতিক দেশের ২ জন ও ৩ জন বিদেশী সদস্য থাকবেন । জুরি বোর্ডের সদস্যগণ ৩ দিন ধরে
বিভিন্ন দেশের শিল্পকর্ম পরিদর্শন করে পুরস্কারের জন্য শিল্পকর্ম নির্বাচন করবেন ।
প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রদান করা হবে ও পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পকর্মের
প্রতিলিপি ব্রোশিউরে ছাপা হবে ।
৯. ব্রোশিউর
আন্তর্জাতিক
প্রদর্শনীর ব্রোশিউর খুব বড় আকারের ও মানসম্পন্ন হয়ে থাকে । প্রকাশনা উপ কমিটি ব্রোশিউরের
সার্বিক দায়িত্বে থাকেন । ব্রোশিউরে শুরুতেই থাকবে প্রদর্শনীর সাংগঠনিক কমিটির বক্তব্য
। পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পকর্মের প্রতিলিপি, পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পীদের নাম । জুরি
বোর্ডের সদস্যদের নাম, প্রত্যেক দেশের ভূমিকা ও শিল্পকর্মের প্রতিলিপি ও তালিকা । ব্রোশিউরের
কাজটি খুবই স্বল্প সময়ের ভেতর সমাপ্ত করতে হবে । যাতে করে অবশ্যই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
তা উপস্থাপন করা যায় ।